খাবারের সন্ধানে একটি পিঁপড়ে সকাল থেকেই টো-টো করে ঘুরছিল। সে খাবার তো পেয়েছে, কিন্তু তার ইচ্ছে একটু অন্য রকমের খাবারের প্রতি। তাই হন্যে হয়ে জঙ্গলময় ঘুরছে। ঘুরতে ঘুরতে সে দেখল গাছের নীচে ঘাসের উপড়ে কিছু লাল-কমলা জিনিস পড়ে আছে।
অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে একটি পা বাড়িয়ে দিল সেদিকে। সে দেখল তার পা লেগে যাচ্ছে। উঁহু এটি মোটেই ভালো জিনিস নয়। আবার সে রাস্তা হাঁটতে শুরু করে দিল। নিজের অজ্ঞাতেই কখন যে সেই পা টি মুখে দিয়ে দিয়েছে, যখন তার বোধ হল সে থমকে দাঁড়াল। একি তার পা এত মিষ্টি কেনো? উফ দারুন লাগছে এই মিষ্টি টা। তার মনে পড়ে গেল, সেই তার এই পা টিই তো গাছের নীচে পড়ে থাকা সেই লালচে আঠালো বস্তুটার উপর রেখেছিল।
সে আবার দৌড়ে সেই গাছের নীচে গেল, সে দেখল বস্তুটি এখনও পড়ে আছে। সে এবার তার সব পায়ে একে একে সেটি লাগিয়ে নিল আর চরম আনন্দে খেতে খেতে হাঁটতে লাগল। কিন্তু এতেও তার মন ভরল না। সে আবার সেই বস্তুটির কাছে ছুটে গেল। এবার সে মুখ লাগিয়ে আরামে খেতে লাগল। আহা কি সুন্দর এর স্বাদ। সে খেতে খেতে ভাবল- আমি তো এর পাশ গুলোই শুধু খাচ্ছি, না জানি এর পাশ গুলিই যদি এত স্বু-স্বাদু হয়, তাহলে এর মধ্যভাগটা কত স্বু-স্বাদু হতে পাড়ে। সে ঠিক করল সে বস্তুটির মধ্য ভাগের স্বাদের আনন্দ উপভোগ করবে।
সে মধ্যভাগে যাওয়ার জন্য সামনের পা দুটি সেই বস্তুটির উপর রাখল কিন্তু পা সেই আঠালো বস্তুটির উপড়ে লেগে যাচ্ছে। তাই সে ঠিক করল গাছের উপর থেকে সোজা বস্তুটির মধ্যভাগে লাফ দিয়ে স্বাদ অনুভব করবে। ব্যস এরপর সে গাছে উঠে দিয়ে দিল এক লাফ,এসে পড়ল নীচে থাকা বস্তুটির উপড়ে। কিন্তু সে উপর থেকে লাফ দেওয়ায় একটু ভিতরে চলে গেল, আর তার সাড়া শরীর সেই চটচটে বস্তুটি দিয়ে ঢেকে গেল, বেচারি সেই মধ্যভাগের মধুর স্বাদ নেওয়ার পরিবর্তে সেখান থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসার বৃথা চেষ্টা করতে লাগল। আর একটা সময় পর তার প্রচেষ্টার অবসান হয়ে গেল, তার নিথর দেহ সেখানেই পড়ে রইল।
এতক্ষণে হয়ত বুঝে গেছেন, সেই বস্তুটি কি ছিল, আজ্ঞে সেই বস্তুটি ছিল মধু।
গল্পটির নীতিকথাঃ-
এই গল্পটি থেকে আমরা যে শিক্ষণীয় কথা জানতে পাড়ি সেটি হল- “অতিরিক্ত লোভ কোনোমতেই ভালো নয়, কারণ লোভের ফলেই মানুষের বুদ্ধিভ্রম ঘটে।